দুটি কবিতা

ভাঙাঘরে ডেটলের গন্ধ আর নাভির উপর স্থলপদ্ম বাটিকপ্রিন্ট করা অনন্তসম্ভবা এসব নিয়েই আমার যাপন জীবনের ওঠানামা, এপার ওপার এভাবেই সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে অন্ধকারে পেঁচিয়ে গেল ঘুম রুমালে চোখ মুছে বিভ্রমের মায়া ছড়িয়ে পড়ল এদিক সেদিক ইশারায় কচুরিপানার দিঘি টমেটো ফুলের…
গীতবিতানের মতো চোখ রেখে আমি ফিরছি দখিনের ব্যালকনি খুলে রাখো দু’হাতে বিনুনি বাঁধো সামনে উথলে ওঠা ঢেউ , সমুদ্র নোনা গন্ধে ভেসে যাচ্ছে সোঁদামাটির আগুন তবু বৃষ্টিপাতের পরে চাষ হয় বীজ বোনে , ফসলে ফসলে একাকার ঠোঁটের আকুলতা হৃদয় আরশিতে…
ওখানে আমার সর্বস্ব রয়েছে সবুজ ছোট্ট স্টেশন প্ল্যাটফর্মের ওপারে ধ্যানমগ্ন অরণ্যে আদরিনী মা’! মনে পড়ে,প্রথম যখন রবীন্দ্র- ধুলোয় মাথা ঠেকালাম, আবেগতাড়িতভাবে বিশ্ব কবির পদশব্দ শুনি নিম ও চন্দন বাগানে… বাবার ডাকে ঘোর কাটলো এক অনন্ত তৃষ্ণার, যে তৃষ্ণার জল পাওয়া…
এই প্রকাশ্য প্রদর্শন চোখ ঝলসে দেয় নিজস্ব রাজপাট গড়ার এক নোংরা বাজার পেয়াজের খোসা, রসুনের চোকলা উড়ছে যত্রতত্র নিজেদের সুবিধামতো যুদ্ধ বাধাই অহরহ তারপর গোপন কিছু শলা কিংবা পরামর্শ! নিজের জন্য অমঙ্গল চেয়ে আনি প্রভু অপরের ব্যাগে ভরে দিই মঙ্গলশঙ্খ…
সুবিমল মিশ্র লেখক হতে আসেননি। লেখা নামক ক্রিয়া–প্রক্রিয়াকে নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে এসেছিলেন। লেখক হয়ে ওঠার বদলে কীভাবে চলতে পারে আগামী শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অক্ষরের চাষাবাদ তা নিয়ে জমি প্রস্তুত করে একের পর এক ফসল ফলিয়েছেন। সেই বীজতলা তিনি পাঁচ দশকের…
সোমবার মাংসের বাজারে কমলাদির সঙ্গে আমার দেখা হয়। অনেকদিন ২৩ কি ২৪ বছর পর সেই প্রথম দেখা। কমলাদি নাকে রুমাল চেপে মাংস কিনছিল। তার চারপাশে ভনভন করে মাছি উড়ছিল। মাংসের কটু পচা গন্ধ। মাচার উপর ছাল ছড়ানো, ঝোলানো পাঁঠার মুখোমুখি…
পুতা বুতাম বং টি এস্টেট। আজ সকাল সকাল কলকাতা থেকে এসেছি, প্রপিতামহের পুরাতন এস্টেটের দেখভাল করার জন্য। আমি অনিন্দ্য নারায়ন, সঙ্গে চাকর সদানন্দ। সিঙ্গামারি গ্রাম। সমতল থেকে প্রায় ৬৫০০ ফিট উঁচুতে, সিকিমের রাস্তায়। ঘন পাইন জঙ্গলের ভীতর তিস্তা নদীর ধারে…
“কালকে তাহলে কোথায় যাচ্ছেন?”–ঘাম চপচপে জমাট ভিড় থেকে এমনই প্রশ্ন ভেসে এলো। ঘাড় ঘুরিয়ে প্রশ্নকর্তাকে খোঁজার চেষ্টা করলাম। আর সেটা করতে গিয়েই বিপত্তি। শরীরটাকে এমন বেঁকিয়ে ফেলেছি যে নর্মাল পজিশনে আসতে ততটাই সময় লাগবে যতটা কংগ্রেসের লাগবে ভারতের শাসক হিসেবে…
বুকের পাঁজরে রাখা লাল-নীল ছবি একদিন ঠিক বড়ো হবে তুই, মেঘের পরিবার চেনাই তোকে চিনে রাখ অনন্ত শোক। জীবন ভেসে যাবে যেন নদী দূকুল ছাপিয়ে ঢুকে আসে গ্রামে এখানে মানুষ বড়ো শক্ত কাঁদিনি একফোঁটা কখনও আমি তবুও আষাঢ়ের বৃষ্টি হয়ে…